নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে সংরক্ষিত আলু রাখতে হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধি করায় প্রতিবাদ সভা করেছেন আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা। রোববার সকাল ১০টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলা চত্বরে ও রাজশাহী নওগাঁ মহাসড়কে আলু ফেলে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা।
প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোহনপুর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শামিমুল ইসলাম মুন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুব আর রশিদ। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মোহনপুর শাখা আমির জিএম আব্দুল আওয়াল। আলুচাষীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকির হোসেন বকুল।
প্রতিবাদ সভায় আলুচাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোহনপুর উপজেলা সভাপতি তোফায়েল হোসেন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মৌগাছি ইউনিয়ন বিএনপি সাধারণ সম্পাদক ইউনুচ আলী ও তানোর উপজেলার লুৎফর রহমানসহ অন্যান্যরা। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, গত মৌসুমে হিমাগার কর্তৃক আলুর ভাড়া ছিল প্রতিবস্তা ২৫৫ টাকা। কিন্ত এবার দাম বাড়িয়ে ২০২৫ মৌসুমের জন্য বস্তায় ৬৫ থেকে ৭০ কেজি আলুর নতুন মূল্য ২৮৫ টাকা নির্ধারণ করে হিমাগার কর্তৃপক্ষ আলুচাষি ও ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তিপত্র স্বাক্ষর করেন। বর্তমানে তারা সেই চুক্তিপত্র বাতিল করে নতুন করে কেজি প্রতি আলুর ভাড়া নির্ধারণ করেন ৮ টাকা। যা আগের নির্ধারিত মূল্যের দ্বিগুণ। যার ফলে আলুচাষী কৃষকদের ন্যায্য অধিকার বিনষ্ট হচ্ছে।
তারা আরো বলেন, রাজশাহী জেলায় বর্তমানে ৩৬টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। অবিলম্বে অতিরিক্ত ভাড়া কমিয়ে আগের ভাড়া নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিবাদ সভা শেষে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন আলুচাষী ও ব্যবসায়ীরা।
এদিকে গত ৬ জানুয়ারী মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়শা সিদ্দিকা কর্তৃক রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বরাবর পাঠানো প্রতিবেদন হতে জানা গেছে, এই অঞ্চলে দীর্ঘদিন যাবত আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা ৭০-৮০ কেজি ওজনের বস্তায় আলু সংরক্ষণ করে আসছেন এবং বস্তাপ্রতি দুইশত পঁয়ষট্টি টাকা পরিশোধ করতেন। বর্তমানে কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশন কর্তৃক ২০২৫ সালে প্রতি কেজি আলু আট টাকা হারে সংরক্ষণ ভাড়া ধার্য করায় প্রতি ৬০ কেজির আলু বস্তা সংরক্ষণে চারশত আশি টাকা খরচ হবে। সেকারণে পরবর্তীতে আলুর খুচরা মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রভাব পড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে গত ১৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশন (বিসিএসএ) চেম্বার অব কমার্সের মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, তারা আলু সংরক্ষণে বস্তাপ্রতি ভাড়া সামান্য কিছু বৃদ্ধি করেছে। গত বছর ৫০ কেজির বস্তাতে ৩৪০ টাকা ভাড়া নেওয়া হত। এর ফলে কেজি প্রতি সংরক্ষণে খরচ পড়ত প্রায় সাত টাকা। কিন্তু কোল্ড ষ্টোরেজ ব্যবস্থাপনা ব্যয় বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশন (বিসিএসএ) চলতি মৌসুমে কেজি প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করেছে সর্বোচ্চ আট টাকা। এরপরেও কোল্ড ষ্টোরেজ এসোসিয়েশনের সিদ্ধান্ত রয়েছে এ এসোসিয়েশনের সদস্যরা এর চেয়েও কম ভাড়ায় তারা নিজস্ব সিদ্ধান্তে আলু সংরক্ষণ করতে পারবেন।