নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, রাসিক সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিনু বলেন, বাংলাদেশ আমাদের মাতৃভূমি। রক্ত দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করা হয়েছে। অনেক ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে দেশে কোন গণতন্ত্র নাই। বিগত পতিত সরকারের আমলে সমুলে গণতন্ত্র নির্সাসিত হয়েছে। বিএনপি আগামীতে নির্বাচিত হতে পারলে বাংলাদেশকে আবারও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ন্যায় গড়ে তোলা হবে। সেইসাথে বেগম খালেদা জিয়ার মতো একটি শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
তিনি আরো বলেন, সকল দলমতের চাহিদা মোতাবেক এই বছরের শেষের দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার দাবী জানান। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আপনাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। শুক্রবার রাজশাহী মহানগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি অন্তবর্তী সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি একজন দেশ বরণ্য মানুষ। শান্তিতে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছেন। যখন আপনি নোবেল পুরস্কার নিয়ে দেশে ফিরে এসেছিলেন, তখন এই ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা আপনাকে বাধা দিয়েছিলো এবং আপনাকে অসম্মান করেছিল। কিন্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ভাই ও আমাকে এবং মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে আপনার কাছে পাঠিয়েছিলেন দেশবাসীর পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
বেগম খালেদা জিয়া আপনাকে প্রথম সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে বরণ করেছেন। আপনাকে যখন নির্যাতন করা হচ্ছিল, তখন দেশনেত্রী প্রতিবাদ করেছিলেন। জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। আমরা অনুরোধ কববো, আপনি কারো কথায় বিভ্রান্ত হয়েন না। দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে পরিচালনা করতে গেলে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রয়োজন। একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন আপনি গঠন করেছেন। সকল দলমতের চাওয়া মোতাবেক এই বছরের শেষের দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আপনাকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেবে।
দীর্ঘ ১৭ বছর দেশ যেন সেই ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের মতোই পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। জাতি দিশেহারা হয়ে পড়েছিল। আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট খুনি ও স্বৈরাচার, দুর্নীতিবাজ হাসিনা, যার নাম সারা পৃথিবীতে কলঙ্কজনভাবে লেখা হচ্ছে। সেই হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে দক্ষতার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন তারেক জিয়া। পরবর্তীতে ছাত্র-জনতার অভ্যুথানের মধ্যে দিয়ে হাসিনার হাত থেকে দেশ রক্ষা হয়।
আর এটা করতে গিয়ে হাজার হাজার ছাত্র-জনতা জীবন উৎসর্গ করে শহীদ হয়েছেন। তাদের মধ্যে শহীদ আলী রায়হান এই এলাকায় (প্রোগামস্থলের কাছে) হাসিনার দুর্নীতিবাজ মাস্তানদের দ্বারা এই মাটিতেই শহীদ হয়েছেন। আলি রায়হানসহ আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। যারা অসুস্থ তাদের সুস্থতা কামনা করছি।
কমেলা হক ডিগ্রী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক একরামুল হকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, রাজশাহী মহানগর জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ডক্টর ইঞ্জিনিয়ার আক্তার হোসেন, রাবি শাখা জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. মোহা. এনামুল হক, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম রাবি শাখার সভাপতি প্রফেসর ড. আব্দুল আলিম ও রাবি শাখা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. ফরিদুল ইসলাম।
ইফতার ও দোয়া মাহফিলে স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, গৌতম মোহান চৌধুরী ও বরজাহান আলী। ইফতারের আগ মুহূর্তে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া করা হয়।