বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
রাজশাহীতে বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস পালন পবায় বিশ্ব মৌ-পতঙ্গ সুরক্ষার দাবিতে কৃষকবন্ধন রাজশাহী জেলা বিএনপি’র সদস্য মুন্টুকে কমিটি গঠনের সদস্য পদ থেকে অপসারনের দাবী গোদাগাড়ীর কাঁকনহাট হাট-বাজার টাকা পরিশোধ ছাড়াই ইজারা দেয়ার অভিযোগ রাজশাহী মহানগীর ১৯নং ওয়ার্ড(উত্তর-দক্ষিণ) যুবদলের কর্মী সভা মোহনপুরে বিএনপি নেতা ইউনুচ আলীর মায়ের ইন্তেকাল রাজশাহীর দুইটি ফেরীঘাটে ইজারা ছাড়াই চলছে পারাপার রাজশাহীর পবায় গভীর নলকূপ জোরপূর্বক দখলে রাখার অভিযোগ আওয়ামীলীগের দোসর মুকুলের বালিঘাট ইজারার বাতিলে ৪৮ঘন্টা আল্টিমেটাম প্রধান বিচারপতির ১২ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রয়োজন সৎ, দক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও দেশপ্রেমিক বিচারক

হাজারো প্রাণের উচ্ছ্বাসে শেষ হলো বর্ষবরণ র‍্যালি

  • প্রকাশ সময় সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫৩ বার দেখা হয়েছে

এস.আর ডেস্ক: পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হওয়া বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রার র‍্যালি শেষ হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় র‍্যালি শুরু হয়ে সাড়ে ১০টার দিকে চারুকলা অনুষদের সামনে এসে সমাপ্ত হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শাহবাগ মোড় হয়ে টিএসসি দিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে যায়। সেখান থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর ঘুরে টিএসসি হয়ে আবার চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হয়।

শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ প্রমুখ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন দেশের অতিথি অংশ নিয়েছেন। এ বছর প্রধান ৭টি মোটিফ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে দীর্ঘসময়ের ফ্যাসিবাদী শাসনের চিত্র তুলে ধরতে ‘ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি’ মোটিফ রাখা হয়েছে।

শোভাযাত্রার সামনে ছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সুসজ্জিত একটি ঘোড়ার বহর। এরপরই ছিল দেশের ২৮টি নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষ। এরপর ছিল চারুকলা অনুষদের মূল ব্যানার। আরও ছিল ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, মাছ, শান্তির পায়রা, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নাম, পানির বোতল, ৩৬ জুলাইয়ের একটি মোটিফ, ১০০ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি স্ক্রল প্রভৃতি।

বাঁশের বেত-কাঠ দিয়ে মুখাকৃতিটি তৈরির পর শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোরে এক দুর্বৃত্ত এটি জ্বালিয়ে দেয়। পরে ককশিটের ওপর পুনরায় এটি তৈরি করা হয়।

এবারের শোভাযাত্রায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদের ‘প্রতীকী মোটিফ’ রাখার প্রাথমিক চিন্তা ছিল। তবে পরিবারের অনুরোধে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে প্রশাসন। আবু সাঈদের প্রসারিত দুইহাত না থাকলেও আনন্দ শোভাযাত্রায় স্থান পেয়েছে মুগ্ধের প্রতীকী পানির বোতল। এটি দ্বারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জীবন দেওয়া শহীদদের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।

এছাড়াও এবারের শোভাযাত্রায় বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক বাঘ, ইলিশ মাছ, শান্তির পায়রা, পালকি রয়েছে। এ বছর ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মুসলমানদের লড়াই সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তরমুজের ফালি মোটিফ হিসেবে রাখা হয়েছে। তরমুজ ফিলিস্তিনিদের কাছে প্রতিরোধ ও অধ্যাবসায়ের প্রতীক হিসেবে পরিচিত।

বড় মোটিফের পাশাপাশি এ বছর মাঝারি মোটিফ রয়েছে ৭টি। এর মধ্যে সুলতানি ও মুঘল আমলের মুখোশ, রঙিন চরকি, তালপাতার সেপাই, তুহিন পাখি, পাখা, ঘোড়া ও লোকজ চিত্রাবলির ক্যানভাস রয়েছে।

এছাড়া ছোট মোটিফগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি, বাঘের মাথা, পলো, মাছের চাই, মাথাল, লাঙল এবং মাছের ডোলা। এবারের শোভাযাত্রায় বিশেষ স্থান করে নিয়েছে বাংলার প্রাচীন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পটচিত্র। পট বা বস্ত্রের ওপর এই লোকচিত্র আঁকা হয়। চারুকলায় এবার ১০০ ফুট দীর্ঘ লোকজ চিত্রাবলির পটচিত্র আঁকা হয়েছে।

এবারের বর্ষবরণ অন্যবারের চেয়ে একটু আলাদা। গেল ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এটাই প্রথম বাংলা নববর্ষ উদযাপন। ফ্যাসিস্ট ও ফ্যাসিবাদমুক্ত বর্ষবরণ উৎসবে মাতোয়ারা দেশবাসী। এক নতুন চেতনায় বর্ষবরণ আয়োজনের প্রচেষ্টা চলছে দেশজুড়ে।

পটচিত্রে আকবর, বাংলাদেশের জাতীয় পশু বাঘ, বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সংগ্রাম ১৯৫২ ও ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদ, বেহুলা লখিন্দর, বনবিবি এবং গাজীরপট আঁকা হয়েছে। প্রত্যেকটি চিত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে বাঘ এবং বাঘের রং। এর আগে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে স্থাপনের ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

১৯৮৯ সালে চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো বের হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা তবে ১৯৯৬ সাল থেকে চারুকলার এই শোভাযাত্রা ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পায় এই শোভাযাত্রা। তবে এবার বর্ষবরণের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম বদলে রাখা হয় বর্ষবরণের ‘আনন্দ শোভাযাত্রা’।

এস.আর/এসডি-১৪-০৪/২৫

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin