নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির ৩১ দফায় ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করার অঙ্গীকার রয়েছে। অথচ স্বাধীনতার চেতনার কথা বলে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা পূজামণ্ডপে গিয়ে ইসলামবিরোধী প্রচারণা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। ধর্মের নামে এই অপপ্রচারকারীদের এখনই বয়কট করতে হবে।
রোববার বিকেলে রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার শ্যামপুর জুনিয়র স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত ৩১ দফা রূপরেখা ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে প্রচারণা বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেলা বিএনপির সদস্য ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রায়হানুল আলম রায়হান। এই কর্মশালার আয়োজন করে কাটাখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন। সভাপতিত্ব করেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ডা. মাজিদুর রহমান।
কর্মশালায় জেলা বিএনপি নেতা রায়হানুল আলম রায়হান ধর্মীয় অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিএনপি সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার ও নিরাপত্তায় বিশ্বাসী। কোন দুস্কৃতিকারী বা কুচক্রী মহল যাতে মানুষের ধর্ম পালনে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়ে তারা সতর্ক আছেন। ইসলামের নামে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা ধর্মের শত্রু, তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে ইসলামসহ সব ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালন করতে পারবে এটাই বিএনপির প্রতিশ্রুতি। বিএনপি ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। এক্ষেত্রে জনগণের ঐক্যই পরিবর্তনের মূল শক্তি। ধর্মীয় স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমেই রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব।
৩১ দফা রূপরেখার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন,“বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছেন, তা কেবল একটি রাজনৈতিক ঘোষণাপত্র নয় এটি হচ্ছে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্র সংস্কারের পূর্ণাঙ্গ নকশা। এতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রশাসনে জবাবদিহিতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত সংস্কার এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির অঙ্গীকার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি’র লক্ষ্য ক্ষমতায় যাওয়া নয়, বরং রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। একটি জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা বিএনপির অঙ্গীকার। পলাতক স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, পলাতক স্বৈরাচারী সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল। এর ফলে নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে, মানুষ মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এখনো একটি রাজনৈতিক দল পিআর পদ্ধতির নামে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করছে— তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
তিনি বলেন,একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল এখন পিআর পদ্ধতির নামে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে এই পদ্ধতির কোনো স্থান নেই। এই প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের দাবি মূলত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এক ষড়যন্ত্র। আজ জনগণ বঞ্চিত, ভোটাধিকার নেই, বিচারব্যবস্থা দুর্বল এর কারণ একদলীয় শাসনব্যবস্থা। এখন সময় এসেছে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে অধিকার ফিরিয়ে আনার।
এই কর্মশালা শুধু দলীয় কর্মসূচি নয়, এটি জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠনের প্রচেষ্টা। তিনি উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ঘরে ঘরে যান, জনগণকে ৩১ দফা জানান, বিএনপির রূপরেখা তুলে ধরুন। বিএনপি’র এই আন্দোলন হবে জনগণের আন্দোলন।
কর্মশালার পর একটি পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সাধারণ মানুষের হাতে ৩১ দফা রূপরেখা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন। স্থানীয় বাজার, দোকানপাট ও রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষকে রূপরেখার উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব বোঝানো হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কাটাখালী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বাবর আলী, বিএনপি নেতা নফেল, আব্দুর রহিম, যুবদল নেতা জিল্লুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। কর্মশালা পরিচালনা করেন কাটাখালী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক। এ সময় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।