নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল হলরুমে সারাদেশের ন্যায় বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) রাজশাহীর ব্যবস্থাপনায় এবং স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদের আয়োজনে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠাসহ ৫ দফা দাবিতে মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বিকেল সাড়ে ৪টায় সংবাদ এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ রাজশাহী জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মোহনপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শাহনেওয়াজ খান। লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষার্থীদের কল্যাণ, শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের বঞ্চনা নিরসনকল্পে স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা এবং একটি আধুনিক সময়োপযোগী পদসোপান সৃষ্টিসহ মাধ্যমিকের নানাবিধ সমস্যার সমাধান কল্পে ৫ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবীগুলো হলো-স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা, সরকারি মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষকের এন্ট্রিপদ ৯ম গ্রেডে উন্নীত করে ৪চার স্তরীয় পদসোপান। অনতিবিলম্বে আঞ্চলিক উপপরিচালকের প্রশাসনিক এবং আর্থিক ক্ষমতা সংরক্ষণসহ মাধ্যমিকের সকল কার্যালয়ের স্বাতন্ত্র ও মর্যাদা রক্ষা, বিদ্যালয় ও পরিদর্শন শাখার সকল শূন্যপদে নিয়োগ, পদোন্নতি ও পদায়ন ও বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল এর মঞ্জুরী আদেশ প্রদান। এই দাবী সমুহ না মানলে আগামী আরো কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাদেরকে নবম গ্রেড প্রদানের জন্য কোর্ট থেকে রায় দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। যে গ্রেড রয়েছে তাতে যে বেতন হয় তা দিয়ে একজন শিক্ষকের সংসার পরিচালনা করা সম্ভব নয়। শুধু তাইনয় সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার করা সরকারের অন্যতম কাজ বলে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছেন। এতে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত শিক্ষার মেরুদন্ড মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ আশান্বিত।
তিনি আরো উল্লেখ করেন সরকারি মাধ্যমিকের প্রায় ১৫ হাজার শিক্ষকের জন্য পদোন্নতিযোগ্য পদ মাত্র ৪%। যৌক্তিক কোনো পদসোপান না থাকায় দীর্ঘ ৩২/৩৩ বছর চাকুরী করেও অধিকাংশ শিক্ষককে পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যেতে হয়। পদোন্নতি অনিয়মিত বিধায় বেশকিছু পদ খালি পড়ে থাকে। যা পদোন্নতি বঞ্চিতদের হতাশ করার পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়নে অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষক-কর্মকর্তাগণ প্রাপ্য বকেয়া টাইমস্কেল, পদমর্যাদা, পদোন্নতি, পদায়ন সহ চাকুরির বিভিন্নক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে সরকারি মাধ্যমিকে বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন জরুরী বলে জানান তিনি।
এ সময়ে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) রাজশাহীর সদস্য সচিব রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক শহীদুল্লাহ, রাজশাহী অঞ্চল ও জেলা বাস্তবায়ন কমিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে যথাক্রমে কমিটির আহ্বায়ক ও আঞ্চলিক উপপরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা আব্দুর রশিদ, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াহাব, রাজশাহী জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা আখতার জাহান, রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. নূরজাহান বেগম, গভঃ ল্যাবরেটরী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ড. শাহানাজ বেগম, সরকারি প্রমথনাথ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ড. দিল মাহমুদা বেগম, সিরোইল সরকারি উচ্চ বিদালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, হাজী মুহম্মদ মুহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঞ্জুমান আরা খানম, রাজশাহী জেলার সবকারি ও বেসরকারি স্কুলসমূহের সম্মানিত প্রধান শিক্ষকগণ এবং অন্যন্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দ মতবিনিময় সভা ও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।