নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল মঙ্গলবার পড়েছে আষাঢ় মাস। ফুলে ভরে উঠেছে কদম গাছ। বাংলার প্রকৃতি এমনিই। ছয় ঋতুর এই দেশে একেক সময় একেক মৌসুম এসে অনাবিল সৌন্দর্য্যে ভরে দেয় প্রকৃতিকে। বর্ষা মৌসুমও এর ব্যাতিক্রম নয়। প্রচণ্ড খরায় প্রকৃতি রুক্ষতায় রুপ নেয়। এই রুক্ষতা থেকে প্রকৃতিকে রক্ষা করতেই আসে বর্ষা মৌসুম। গাছপালা, তরুলতা সবকিছুই যেন গ্রীষ্মের দহন থেকে পরিতৃপ্তি পেতে বর্ষার বারিধারায় স্নান করে ওঠে। আর প্রথম মাস হচ্ছে আষাঢ়। আকাশে সারাদিন কালো মেঘের ভেলা। অঝড়ে ঝড়তে থাকে আকাশের কান্না। এই কান্নায় প্রকৃতিকুল ফিরে পায় অপার সুখ ও আনন্দ। অনেকেই সুযোগ পেলেই বৃষ্টিতে ভেজার জন্য নেমে পরে মাঠে কিংবা বাড়ির ছাদে। পাড়ার দুরন্ত ছেলেরা ফুটবল হাতে নিয়ে চলে যায় স্কুল কিংবা পাশের খোলা মাঠে বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার জন্য।
আজ বুধবার আষাঢ়ের দ্বিতীয় দিন। দিনের প্রথম প্রহর থেকেই কখনো থেমে থেমে আবার কখনো বিরামহীন ভাবে চলছে বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে জনজীবন থমকে গেছে। অফিসগামী ও খেটে খাওয়া মানুষ গুলো পড়েছে বিড়ম্বনায়। একদিকে রাজশাহীতে চলছে কঠোর লকডাউন। বৃষ্টি লকডাউনকে সফল করতে সহযোগিতা করছে। ইচ্ছে করলেই কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারছেনা। নিরুপায় হয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হচ্ছে। একটু হলেও শান্তি পেয়েছেন আইনশৃংখলাবাহিনীর সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
এই যখন অবস্থা, তখনই চিরচেনা বিপদে পড়েছে নগরীর নিম্নাঞ্চালে বসবাসকারী জনগণ। সামান্য বৃষ্টিতে এখনো জলাবদ্ধতায় আটকে থাকে ঘন্টার পর ঘণ্টা। রাস্তাঘাট ডুবে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আবার কারো কারো বাসাবাড়িতে প্রবেশ করছে বৃষ্টির পানি। নগরীর ভাটাপাড়া বাকীর মোড়, মেহেচন্ডী কড়াইতলা এলাকা, ঝাউতলা, চন্ডিপুর এলাকার মত নিচু এলাকাগুলো ডুবে যাওয়ায় জনগণ পড়েছে বিড়ম্বনায়। এরজন্য এলাকাবাসী সরু ড্রেন ও পানি নিস্কাশনের বিকল্প রাস্তা না থাকা এবং নিয়মিত ড্রেন পরিস্কার না করাকে দায়ী করেন।
ভাটপাড়া বাকীর মোড়ের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন, আয়নাল হক, রিপন, শামীম ও ফয়সালসহ আরো অনেকে অভিযোগ করে বলেন, বাকীরমোড় হার্ট ফাউন্ডেশন রোড প্রায় নতুন ভাবে মেরামত করা হচ্ছে। কিন্তু যে পরিমান খোয়াবালি ফেলা হয়েছে, তাতে কোন লাভ হচ্ছেনা। বাইপাশ থেকে রেললাইন পার হয়ে পূর্বেও সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হতো, এখনো এর ব্যত্বয় ঘটেনি। এই বৃষ্টিতে রাস্তা ডুবে আছে। সেইসাথে অনেকের বাসাবাড়িতে প্রবেশ করেছে পানি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে ড্রেুন প্রসস্ত, নিয়মিত পরিস্কার এবং রাস্তা উঁচু করার দাবী জানান তারাসহ এলাকাবাসী।
এদিকে বেলা চারটা পর্যন্ত রাজশাহীতে কি পরিমাণ বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে জানতে চাইলে রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৪টা থেকে আজ বুধবার বেলা ৩টা পর্যন্ত মোট ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এই অবস্থা কয়দিন চলতে পারে সঠিকভাবে বলতে না পারলেও আগামী আরো দুইদিন বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি।