নিজস্ব প্রতিবেদক: রাস্তায় যেন কোন প্রকার ট্রাফিক জ্যাম না হয় তারজন্য ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা রোদ বৃষ্টি, ঝড় মাথায় নিয়ে দিনের প্রায় ১৬-১৮ ঘন্টা কাজ করে থাকেন। রাস্তা শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে ট্রাফিক জ্যাম সামলান। পুরুষের পাশাপাশি নারী সাজের্ন্টরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। শুধু তাইনয় জনগণকে নিরাপত্তা দিতে দিনরাত টহল পুলিশও রাস্তায় থাকছেন।
এখানেও পুরুষ পুলিশ সদস্যর সাথে একসাথে দায়িত্ব পালন করেন নারী পুলিশ সদস্যরাও। পুরুষরা সদস্যরা প্রকৃতির ডাক আসলে রাস্তার পাশে কিংবা কোন হোটেলে, কারো চ্যাম্বারে কিংবা মসজিদে প্রবেশ করে ওয়াস রুমের কাজ সমাধান করতে পারেন। কিন্তু নারী সদস্যরা সবথেকে এ নিয়ে থাকেন বিপদে। তারা ইচ্ছা করলেই যে কোন স্থানে টয়লেট কার্যক্রম সমাধান করতে পারেন না। এতে করে তারা অনেক সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। কারন প্রসাব পাযখানা দীর্ঘক্ষণ আটকিয়ে রাখলে শরীরে নানাবিধ সমস্যা হতে পারে।
এবিষয়ে গাইনী ডাক্তার সাদিয়া আফরিন লিসা বলেন, পায়খানা আটকিয়ে রাখলে পায়খানার রাস্তা দূর্বল হয়ে পড়ে, পায়খানার একটি নির্দিষ্ট সময় আছে, সে সময়ে চাপ আসে। এই চাপ ফিরে গেলে আর সহজে চাপ আসেনা, এতে করে মলাশয় সাইজে বড় হয়ে যায়। এছাড়াও আলসার হওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। মল শক্ত হয়ে গেরে বেশী চাপ প্রয়োগ বের করতে হয়। এতে করে পাইলস হয় এবং এনাল ফিশার হয়ে রক্ত পরে। এছাড়াও মল আটকিয়ে রাখার অর্গানটি দূর্বল হয়ে পড়ে। এতে করে যে কোন সময় মল বের আসে আসতে পারে। সেইসাথে একজন মানুষ দ্রুত অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, প্রসাবের চাপ আসলেই দ্রুত প্রসাব করা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক সময় স্থান এবং পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। ফলে প্রসাবে ইনফেকশন হয়। এতে করে পরবর্তীতে প্রসাব ধরে রাখা কষ্টকর হয়। পরে প্রসাবের অনুভূতি থাকেনা। দীর্ঘদিন এই অবস্থা হলে কিডনীর মারাত্বক সমস্যা হতে পারে। এছাড়াও নারীদের বেশী ইনফেকশন হয়। এতে করে সন্তান হওয়ার সম্ভাবান কমে যায় বলে জানান এই ডাক্তার।
রাজশাহীতে কর্মরত নারী সার্জেন্ট সিমিতা আকতার শিউলি বলেন, রাজশাহীতে সিএন্ডবি মোড়, লক্ষ্মীপুর মোড়, বর্নালীর মোড়, রেলগেট, ভদ্রা মোড়, তালাইমারী, জিরো পয়েন্টে, মনিচত্বর, কাশিয়াডাঙ্গা, আমচত্বর, বেলপুকুর ও কাঁটাখালীতে ট্রাফিক সদস্যরা ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে কর্তব্য পালন করেন। তাদের একটু বসার জায়গাও নেই। এছাড়াও প্রসাব ও পায়খানা লাগলে তাদের দৌঁড়াতে হয় অন্যের টয়লেটে। অনেক সময় টয়লেট না পেয়ে পুরুষ সদস্যরা রাস্তার পাশেই কার্যক্রম সমাপ্ত করেন। কিন্তু নারী সদস্যরা কোথায় যাবে? যদিও কোন টয়লেট তারা পান, সেগুলো ব্যবহার অযোগ্য বলে জানান তিনি। কারো টয়লেট ব্যবহার করতে চাইলে তারা ভালভাবে বিষয়টি নেন না বলে জানান তিনিসহ একাধিক ট্রাফিক সদস্য ও নারী সার্জেন্টগণ।
তারা আরো বলেন, টয়লেট ভাল হলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কারন এটা জীবানুর কারখানা বলে জানান তিনি। তিনিসহ অন্যান্য নারী সদস্য এবং পুরুষ ট্রাফিক সদস্যরা স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে সরকারীভাবে নগরীর ট্রাফিক পয়েন্টে টয়লেট স্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানান।