নিজস্ব প্রতিবেদক : ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী দিবস। তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির উদ্যোগে দেশব্যাপী দিবসটি পালনের অংশ হিসেবে রাজশাহীতেও দিবসটি পালিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ( ২৬ আগস্ট) বেলা ১১টায় নগরীর সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে ফুলবাড়ী শহীদদের স্মরণে অস্থায়ী বেদীতে পুস্পস্তবক অর্পন, ১ মিনিট নীরবতা পালন ও সমাবেশের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি রাজশাহী জেলার আহবায়ক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.আমিনুল ইসলাম কনক। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন অত্র কমিটির সদস্য সচিব ও বাসদ রাজশাহী জেলার সমন্বয়ক আলফাজ হোসেন যুবরাজ। সমাবেশে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন, সিপিবি রাজশাহী জেলার সাধারণ সম্পাদক ও রাকসুর সাবেক ভিপি রাগিব আহসান মুন্না ও গণসংহতি আন্দোলন বাংলাদেশ রাজশাহীর সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট মুরাদ মোরশেদ।
উপস্থিত ছিলেন, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের আহবায়ক আব্দুল মজিদ অন্তর, শিক্ষক নেতা মাহমুদ হোসেন, যুবনেতা সানি, অসীম সরকার লিটন, ছাত্রনেতা মহব্বত হোসেন মিলন, আব্দুর রহমান নবীন ও সজিবুর রহমানসহ আরো অনেকে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০০৬ সালের এইদিনে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে ফুলবাড়ী কয়লাখনি না করার দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে তৎকালীন বিডিআর-পুলিশের গুলিতে আমিন, সালেকিন ও তরিকুল নামের তিন যুবক নিহত হন। আহত হন অন্তত দুই শতাধিক নারী-পুরুষ।
তৎকালীন সময়ে টানা পাঁচদিন আন্দোলন চলাকালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আন্দলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়। ৩০ আগস্ট সন্ধ্যায় পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে ছয়-দফা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সমঝোতা চুক্তিতে সরকারের পক্ষে স্বাক্ষর করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র মিজানুর রহমান মিনু এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে স্বাক্ষর করেন তেল-গ্যাস জাতীয় কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহম্মদ।
বক্তারা বলেন, ফুলবাড়ী ছয়-দফা চুক্তি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। নিহতরা বিচার পায়নি। এশিয়া এনার্জি এখনও দেশ ছেড়ে যায়নি। আন্দোলন করতে গিয়ে আহতরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নিহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের পরিবারগুলো কিছু ক্ষতিপূরণ পাওয়া ছাড়া তাদের আর কোনো দাবি আজও বাস্তবায়ন হয়নি। উপরন্তু নতুন করে দুটি মামলার আসামি হয়েছেন আন্দোলনকারী নেতারা।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আরো বলেন, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে সময় মেষ মুহুর্তে এ আন্দোলনে একাত্বতা প্রকাশ করে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন নির্বাচনে বিজয়ী হলে এসব দাবী মেনে নেয়ার। কিন্তু দীর্ঘ একযুগ ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রী থেকেও সেসব প্রতিশ্রুতি আজও বাস্তবায়ন করেননি। বক্তারা সকল মামলা প্রত্যাহার এবং এই চুক্তি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করার দাবী জানান।