এস.আর.ডেস্ক: উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানিও বাড়লেও দেশের পাবনা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। যদিও এখনো দেশের ৬ নদীর ৯টি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানিও বাড়ছে। ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাড়তে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারি পয়েন্ট, যমুনা নদীর কাজীপুর , সারিয়াকান্দি ও মথুরা পয়েন্টে এবং তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টের পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
তবে পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল আছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে দেশের টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও মানিকগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। অন্যদিকে রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও শরিয়তপুর জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর ও ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য অনুযায়ী, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশের বিভিন্ন জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে। এর ফলে ঐ সময় এসব অঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র এবং আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানির খুব দ্রুত বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছে অধিদপ্তর দুটি।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আরও জানায়, পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৫৩ থেকে কমে ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সুরেশ্বর পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ২৮ থেকে বেড়ে ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে এখন। ভাগ্যকুল পয়েন্টের পানি এখন বিদৎসীমার নিচে চলে গেছে। এদিকে যমুনা নদীর মথুরা পয়েন্টের পানি বিদৎসীমার নিচে নেমেছে। একই নদীর আরিচা পয়েন্টের পানি ৫ থেকে কমে এখন ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। নতুন করে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিদৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।
আত্রাই নদীর বাঘাবাড়ি পয়েন্টের পানি ২০ থেকে বেড়ে ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে গড়াই নদীর কামারখালি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে গেছে। ধলেশ্বরী নদীর এলাসিন পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ১৬ থেকে বেড়ে ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নতুন করে ধরলা নদীর কুড়িগ্রাম পয়েন্টের পানি ৩ সেন্টিমিটার, যাদুকাটা নদীর লরেরগড় পয়েন্টের পানি ৭, মহুরি নদীর পরশুরাম পয়েন্টে ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এছাড়া মেঘনার চাঁদপুর পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৯ থেকে কমে ১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এখন।
গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার স্টেশনে ১৯৬ মিলিমিটার। এছাড়া লরেরগড় স্টেশনে ১২৪, জাফলং এ ৬২, সুনামগঞ্জে ১০০, দুর্গাপুর স্টেশনে ৮২, পাটেশ্বরীতে ৬২, রাঙামাটিতে ৫৫, দিনাজপুরে ৫১, মহেশখোলায় ৭৯, চিলমারিতে ৬২, চট্টগ্রামে ৫৫, নকুয়াগাঁওয়ে ৫০, ঠাকুরগাঁওয়ে ৬৫, পঞ্চগড়ে ৫২ এবং পরশুরামে ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এছাড়া দেশের উজানে ভারতের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চেরাপুঞ্জিতে ১৭৪ মিলিমিটার। এছাড়া জলপাইগুড়িতে ৪৭, দার্জিলিং এ ১১১, শিলং এ ৪৩, পাসিঘাটে ৭৭ এবং দিব্রুগড়ে ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।