শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৪৪ অপরাহ্ন

ফসল বাঁচাতে রাজশাহী বিভাগে লোডশেডিং

  • প্রকাশ সময় সোমবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৪
  • ৪৪ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অতি খরা প্রবণ রাজশাহী অঞ্চলে জমির বোরো ফসল বাঁচাতে প্রয়োজন মতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে সেচযন্ত্রে। আর তাই লোডশেডিং করতে হবে আবাসিকে। শুধু গ্রাম নয়, শহরের আবাসিক এলাকায় লোডশেডিং আরও বাড়বে। আগামী অন্তত ২০ দিন এই অবস্থা থাকবে। বিশেষ করে প্রতিদিন রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সেচযন্ত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে আবাসিক এলাকায় লোডশেডিং বাড়বে।

সোমবার সকালে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চলমান সেচ মৌসুম ও বিদ্যুৎ পরিস্থিতি সংক্রান্ত মত বিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সহযোগিতায় রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সভাটির আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সদস্য (প্রশাসন) হাসান মারুফ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) তরফদার মোহাম্মদ আক্তার জামীল। এছাড়াও বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) লিমিটেড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় রাজশাহী অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও লোডশেডিংয়ের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে দেখা যায়, বিভাগের আট জেলায় গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। অথচ জাতীয় গ্রিড থেকে সেই অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। বর্তমানে কেবল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সেচের জন্যই এখন ৫৮১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু জাতীয় গ্রিড থেকে পাওয়া যাচ্ছে ৩৮৮ মেগাওয়াট। ঘাটতি থাকছে ১৯৩ মেগাওয়াট। বাণিজ্যিক ও আবাসিক সংযোগের ক্ষেত্রে আরও প্রায় ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে প্রতিদিন। একইভাবে চলতি গ্রীষ্ম মৌসুমের শুরুতে নেসকোর ক্ষেত্রেও প্রায় ৪০ শতাংশ বিদ্যুতের ঘাটতি থাকছে।

সভায় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য বোরো ধানের জমিতে সেচ দিতে প্রয়োজন মতো বিদ্যুৎ সরবরাহে সরকারের নির্দেশনার কথা তুলে ধরে বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, বিদ্যুতের ঘাটতি থাকলেও আগে ফসল বাঁচাতে হবে। দেশকে খাদ্যের সংকটে ফেলা যাবে না। খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে তখন আবার ডলার খরচ করে আমদানি করতে হবে। সেদিকে আরেক সংকট। তাই সেচের জন্যই বিদ্যুৎ বেশি দিতে হবে।
এ সময় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, রাত ১১টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত সেচযন্ত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া গেলে ফসল উৎপাদনে সমস্যা হবে না। কিন্তু তা করতে গেলে সবগুলো সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে শহরেও রাতে লোডশেডিং দিতে হবে। আবাসিকের বিদ্যুৎ দিতে হবে সেচে। জবাবে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ফসল রক্ষার জন্য রাতে আমার বাসার বিদ্যুৎও বন্ধ করেন। শহরে আবাসিকের বিদ্যুৎ সরবরাহ কমান। সেই বিদ্যুৎ সেচের জন্য পাঠান। সবার আগে আমাদের ফসল রক্ষা করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, লোডশেডিং শুরু হলে রাজনীতি শুরু হয়। মানুষকে বিক্ষুব্ধ করে একটা পক্ষ ফায়দা হাসিল করতে চায়। গোয়েন্দা তথ্য হচ্ছে, আবাসিকে লোডশেডিং বাড়লে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলার আশঙ্কা আছে। তাই মানুষকে বোঝাতে হবে। ১৫ থেকে ২০ দিন আমাদের কষ্ট করতে হবে ফসল রক্ষার জন্য। তারপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। এই সময়ের মধ্যেও যেন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড না ঘটে তার জন্য গোয়েন্দা নজরদারি বাড়াতে হবে। যেসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা এখনও নেই, সেখানে দ্রুতই লাগাতে হবে যেন অপরাধীদের অন্তত শনাক্ত করা যায়।

মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের রাজশাহী জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুজন সাহা, বগুড়া জোনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অরূপ কুমার বিশ্বাস, বগুড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আমজাদ হোসেন, রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) রমেন্দ্র চন্দ্র রায় ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ছানোয়ার হোসেন বক্তব্য দেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো নিউজ দেখুন
© All rights reserved © 2021 dailysuprovatrajshahi.com
Developed by: MUN IT-01737779710
Tuhin