এস. আর. ডেস্ক : গজারিয়া বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া নদীর পাড়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর তৈরি করতে না করতেই ভেঙে পড়েছে। বৃষ্টির পানি এবং নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যেকটি ঘরই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
অপরিকল্পিতভাবে সরকারি হাজার হাজার একর জায়গা বেদখলে রয়েছে। সেই জায়গা উদ্ধার না করে গুরুত্বপূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর একটি উপহার ঘর যেন তেন জায়গায় তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনের উদাসীনতায়ই এমন ঘটনা ঘটেছে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি বড় রায়পাড়া গ্রামের নদীর পাশে লক্ষ টাকার বালু ভরাট করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়। ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের হাতে বুঝিয়ে দেওয়ার পূর্বেই শনিবার রাতে ভেঙে পরেছে ঘর।
মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া গ্রামে তৈরি করা হয় ২৮টি ঘর। ২৮টি ঘরের মধ্যে ১টি ঘরের বারান্দা ধসে পরেছে।
গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে এই ঘরটির বারান্দার কিছু অংশ ধসে পরে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে আরও কয়েকটি ঘর।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ওই স্থানের ২৮টি ঘরের মধ্যে ২৭ নম্বর ঘরের বারান্দার অংশ এবং একটি কলম ভেঙে পরে। ঘরের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার কারণে এমনটা হয়েছে বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাশের ২৮ নম্বর ঘরটিরও একই অবস্থা। ঘরের তলায় মাটি সরে যাওয়ার কারণে যে কোনো মুহুর্তে সেটা ভেঙে পরতে পারে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে একই সারির অন্তত ৬টি ঘর। ভেঙে যাওয়া ঘরটির মালিক ওমর আলী বিষয়টি সম্পর্কে জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
বড় রায়পাড়ায় ২৮টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় তার মধ্যে পাঁচটি পরিবার সেখানে থাকছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তারাও এখানে নিয়মিত থাকেন না। শুধুমাত্র প্রশাসনের ভয়ে দিনের বেলায় এসে ঘোরাফেরা করেন। এখানে না থাকলে ঘরের বরাদ্দ বাতিল হয়ে যাবে এই ভয়ে থেকে অনেকে সকালে রান্না করে নিয়ে আসেন দুপুরে থেকে বিকালে অন্যত্র চলে যান। বিশুদ্ধ খাবার পানি এবং রান্না করার ব্যবস্থা থাকায় আপাতত এখানে থাকা সম্ভব নয় বলে জানান, তারা।
গজারিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টির ফলে একটি ঘরের নিচের মাটি সরে গিয়ে তার কিছু অংশ ও একি কলম ভেঙে পরেছে। ইতোমধ্যে তার দপ্তর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিয়াউল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে একটি ঘরের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা মেরামতের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এ সব ঘরের ভিত্তি বেশি গভীর নয় বিধায় এ সমস্যাটি হয়েছে।
এ সব ঘর নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন সরকারি গাইডলাইন মেনে ঘরগুলো নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকটি পরিবার সেখানে থাকা শুরু করেছে শিগগিরই সেখানে বিশুদ্ধ পানিসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।