এস.আর.ডেস্ক: অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিশিল্ডের সাত লাখ ২১ হাজার ডোজ টিকা ঢাকায় পৌঁছেছে। শনিবার (২১ আগস্ট) ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজের একটি বিমানে এই টিকা ঢাকার হযরত শাহজালাল (রা.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব জসিমউদদীন খান এবং ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত নাওকি আটিও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
সব মিলিয়ে দেশে এখন পর্যন্ত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এক কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার ১০০ ডোজ টিকা এসেছে।
এ বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয় অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত ও ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি কোভিশিল্ড টিকা দিয়ে। সেরামের সঙ্গে তিন কোটি টিকার চুক্তি হয় বাংলাদেশের। প্রতিমাসে ৫০ লাখ টিকা আসার কথা ছিল। চুক্তির আওতায় গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে সরকারের কেনা টিকার ৫০ লাখ ডোজ আসে। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা এই টিকার দ্বিতীয় চালানে ২৩ ফেব্রুয়ারি আসে ২০ লাখ ডোজ। এই দুইবারের টিকার বাইরে ভারত সরকারের টিকা রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় সেরাম থেকে চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ এখনও এই টিকা পায়নি।
তবে ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২১ জানুয়ারি ২০ লাখ ডোজ এবং ২৬ মার্চ ১২ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে।
আর কোভ্যাক্স সহায়তায় ২৪ জুলাই জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ এবং ৩১ জুলাই ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ টিকা এসেছে দেশে। এছাড়াও গত ৩ আগস্ট এসেছে ৬ লাখ ১৬ হাজার ৭৮০ ডোজ টিকা।
কোভ্যাক্স হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে গঠিত আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (গ্যাভি)। প্রাণঘাতী ও সংক্রামক ব্যাধি থেকে দরিদ্র দেশগুলোর শিশুদের জীবন রক্ষায় টিকা প্রদানে ভূমিকা রাখা গ্যাভি বিশ্বের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশকে করোনাভাইরাসের টিকা সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে। দরিদ্র দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে গঠন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স।
কোভ্যাক্স-এর পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ছাড়াও উদ্যোগটির সঙ্গে রয়েছে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন ও দাতব্য সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। এ উদ্যোগের লক্ষ্য হচ্ছে, ভ্যাকসিন মজুত করে না রেখে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সর্বোচ্চ ঝুঁকির দেশগুলোতে তা বণ্টন করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে উৎসাহিত করা।
সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় ১৩ কোটির বেশি মানুষকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছে। কোভ্যাক্স থেকে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।
এ বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির মধ্যেই কোভ্যাক্স থেকে টিকা পাওয়া শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিশ্বজুড়ে টিকার সংকট তৈরি হওয়ায় তা পিছিয়ে যায়।