নিউজ ডেস্ক/সুপ্রভাত রাজশাহী
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী জুনায়েদ সিদ্দিক। উপবৃত্তির টাকা তুলে নতুন ব্যাগ ও ছাতা কেনার কথা ছিল তার। কিন্তু সেই টাকা পায়নি জুনায়েদ। তাই কেনাও হয়নি নতুন ব্যাগ-ছাতা। এই আক্ষেপ লুকাতে পারেনি ওই শিশু শিক্ষার্থী। গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরাবর খোলা চিঠি লিখেছে সে। তার বাবা সিরাজুল ইসলাম সেই চিঠির ছবি তুলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন। মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
জুনায়েদ তার চিঠিতে লিখেছে, ‘আমার উপবৃত্তির টাকা আমি এখনো পাইনি। বাবা বলেছিল উপবৃত্তির টাকা পেলে স্কুলব্যাগ আর ছাতা কিনে দেবে। কিন্তু আর তা হলো না। স্যারদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, কেউ আমার টাকা তুলে নিয়েছে। প্রতিদিন আমাকে ছেঁড়া ব্যাগ আর ভাঙা ছাতা নিয়ে স্কুলে যেতে হয়। তাতে আমার কোনো দুঃখ নেই। এরপর যেন এমনটি না হয় এটাই দাবি।
পেশায় রিকশাচালক জুনায়েদ সিদ্দিকের বাবা সিরাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি নগদ হিসাব থেকে ছেলের উপবৃত্তির টাকা তুলতে গিয়ে জানতে পারেন, সেই টাকা অন্য কেউ তুলে নিয়ে গেছে। পরে বিষয়টি নিয়ে রাজশাহী জিপিওতে নগদ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। তারাও এ বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেননি। ফলে ছেলেকে নতুন ব্যাগ ও ছাতা কিনে দিতে পারিনি।
বিষয়টি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ছেলেকে জানাই। ওই দিনই জুনায়েদ প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি লিখে। সেই চিঠি নিজের ফেসবুক দেয়ালে পোস্ট করি।
এ ব্যাপারে তেবিলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাফির উদ্দিন মন্ডল বলেন, বিদ্যালয়ে ১২৭ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে জুনায়েদসহ ২১ জন। প্রত্যেককে নতুন পোশাকের জন্য ১ হাজার টাকা এবং প্রতি মাসে ১৫০ টাকা হারে উপবৃত্তি দেয় সরকার। অভিভাবকদের নগদ হিসাবে এই টাকা চলে আসে। অনেকেই উপবৃত্তির টাকা তুলতে পারলেও কেউ কেউ পারেনি। জুনায়েদও যে উপবৃত্তির টাকা পায়নি তা তিনি জানতেন না। তার লেখা চিঠি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর জানতে পারেন। এ নিয়ে তাদের করার কিছুই নেই।
এদিকে, শিশু জুনায়েদ সিদ্দিকের লেখা চিঠি নজরে এসেছে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিলের। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানাকে বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ইউএনও বলেন, খবর পেয়ে শনিবার জুনায়েদকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। দুপুরের দিকে বাবা ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এসেছিল সে। ওর হাতে নতুন ছাতা ও ব্যাগসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। কীভাবে ওই শিশু উপবৃত্তির টাকা বঞ্চিত হলো সেটি খুঁজে বের করতে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সুপ্রভাত রাজশাহী/জে.সি