নিজস্ব প্রতিবেদক: চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফিল্টিপাড়া স্কুল মাঠে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কোল সম্প্রদায়ের গেরাম পূজা উদযাপন করা হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও আমনুরার এনজিআর সংস্থার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ড. মুনিরা সুলতানা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার তাছমিনা খাতুন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ও রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নির্বাহী কমিটির সদস্য আকবারুল হাসান মিল্লাত, একাডেমির গবেষণা কর্মকর্তা বেনজামিন টুডু, সহকারী অধ্যাপক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য সুনিল কুমার মাঝি, এনজিআর সংস্থার নির্বাহী পরিচালক স্টেফান সরেন, একাডেমির নির্বাহী কমিটির সদস্য সুসেন কুমার শ্যামদুয়ার ও সুবোধ চন্দ্র মাহাতো এবং উত্তরবঙ্গ আদিবাসী ফোরাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের সভাপতি হিংগু মুরমু।
একাডেমির সংগীত প্রশিক্ষক মানুয়েল সরেন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অত্র এলকার কোল সম্প্রদায়ের গ্রাম প্রধান, নারী নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ জনগণ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে কোল সম্প্রদায়ে সংস্কৃতি রক্ষায় সামাজিক সংগঠনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শুরু হয় গেরাম পূজা উৎসব। অনুষ্ঠানে একাডেমি গবেষণা কর্মকর্তা শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। সেইসাথে কোল সম্প্রদায়ের বর্তমান অবস্থা, সংস্কৃতিক ও উৎসব সম্পর্কে তুলে ধরেন। সেইসাথে তাদের শিক্ষার অবস্থা সম্পর্কে প্রধান অতিথিকে অবহিত করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, কোন সম্প্রদায়কে পিছিয়ে রেখে দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার সকল যুবক-যুবতীদের কর্মমূখি করে তুলতে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। তিনি বলেন, আঠার বছরের আগে বিয়ে নয়, বিশ বছরের আগে সন্তান নয়। প্রতিটি কন্যা সন্তানসহ সকল সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, সামনে যে দিন আসছে তাতে সবাইকে কাজ করে খেতে হবে। অতএব কন্যা সন্তানদের বোঝা না মনে করে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, দেশে বর্তমানে আঠারো কোটির উপরে জনসংখ্যা রয়েছে। এই বিশাল চাপ নিয়ন্ত্রণে অনেক কষ্ট করতে হয়। এজন্য তিনি সন্তানাদি কম রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সংস্কৃতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির কালচারাল একাডেমি রাজশাহী বিভাগের গেজেট ভূক্ত সকল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় এই জনগোষ্ঠির আর্থ-সামজিক উন্নয়নেও কাজ করে যাচ্ছে। আগামীতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এদিকে অতিথিদের বক্তব্যের মাঝে মাঝে কোল সম্প্রদায়ের ছেলে-মেয়েদের নাচ অনুষ্ঠিত হয়। শেষে অংশগ্রহনকারী সকলের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সেইসাথে কোল সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে সাত সদস্য বিশিষ্ট কোল সামাজিক সংগঠন মাতো বাইস নামে একটি সামাজিক সংগঠনের এডহক কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও চার সদস্য বিশিষ্ট একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা হয়।