নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মহ হুমায়ূন কবীর বলেন,জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলকে যেভাবে ভালবাসতেন, ঠিক তেমনি অন্য শিশুদেরকেও তিনি ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধুর শিশুদের প্রতি ভালবাসা ও শিশুমনষ্ক স্বভাবকে সম্মান জানিয়ে তাঁর জন্মদিন কেজাতীয় শিশু দিবস করা হয়েছে। রোববার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’ শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, টুঙ্গীপাড়ার অজপাড়া গাঁয়ে যদি তাঁর জন্ম না হতো, তবে বাঙালী জাতি জানতো না স্বাধীনতা কাকে বলে। তাঁর মাত্র ৫৫ বছর জীবনের প্রায় ১৩ বছরই কেটেছে কারাগারে। বাঙালির জন্য কত আত্মত্যাগ করেছেন তিনি। তাঁর একটাই লক্ষ্য ছিলÑ বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার এক সপ্তাহ আগে বঙ্গবন্ধুর ৫২তম জন্মদিন ছিল। এই দিনে অনেক বিদেশি নাগরিক তার সঙ্গে উপস্থিত ছিল। তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল অনেক জটিল। এ সময় এক বিদেশি সাংবাদিক তাঁকে জিজ্ঞাস করছিলেন জন্মদিনে আপনার অনুভূতি কী? বঙ্গবন্ধু উত্তর দিয়েছিলেন ‘এই দুখিনি বাংলায় আমার জন্মদিনই বা-কি, মৃত্যু দিনই বা-কি। যখনি কারো ইচ্ছে হলো আমাদের প্রাণ নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু এই পরাধীন রাষ্ট্রকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বানিয়েছেন। বর্তমানে তাঁরই সুযোগ্য কন্যাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দেশে একটি উন্নয়নের রোল মডেল জাতি উপহার দিচ্ছেন। বঙ্গবন্ধু বলতেন শিশুদের যথাযথ শিক্ষার ব্যত্যয় ঘটলে কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়বে। সেই কারণে তিনি শিশুদের পরিপূর্ণ বিকাশে মনোযোগী হয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেনÑ শিশুরা শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সুন্দরভাবে গড়ে উঠুক। বঙ্গবন্ধু বাধ্যতামূলকভাবে প্রাথমিক শিক্ষা ও বিনা বেতনে পড়াশোনার ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। তিনি শিশুদের এতই ভালবাসতেন যে তাঁর শেষ জন্মদিন পালন করেছিলেন শিশুদের নিয়ে। এ সময় তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সভায় রাজশাহী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা আলোচক হিসেবে বক্তৃতা করেন। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, আরএমপি’র কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার, পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান বক্তব্য রাখেন। সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভা শেষে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী ও বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে ১০৪জন শিশুকে নিয়ে সংগীত এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সকালে মহানগরীর বঙ্গবন্ধু চত্বরে জাতির পিতার ম্যুরালে পুস্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হয়।